ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় প্রয়াত স্বামী নোবেলের স্বপ্ন বাস্তবায়নে চেয়ারম্যান পদে লড়বেন স্ত্রী মুন্না

বার্তা পরিবেশক ::
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়নে সাধারণ জনগণের আগ্রহ, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথম নারী চেয়ারম্যান প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নাছির উদ্দিন নোবেলের স্ত্রী ফারহানা আফরিন মুন্না। তিনি সকলের সহযোগিতা ও দু’আ কামনা করেন।
উচ্চ শিক্ষিত, ভদ্র, অমায়িক ফারহানা আফরিন মুন্না। আগামী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ে যাবেন।
পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই প্রথম (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে এবারই প্রথম কোন নারী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

জানা গেছে, ফারহানা আফরিন মুন্না পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়নের সিকদার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা নিহত নাছির উদ্দিন নোবেলের স্ত্রী। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাওয়ার জেরে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাছির উদ্দিন নোবেল সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ায় তার বিধবা স্ত্রী ফারহানা আফরিন মুন্না জনগণের সেবক হতে রাজনীতিতে মাঠে আসেন। বর্তমানে তিনি ২ সন্তানের জননী। এবার তিনি জয়লাভ করে পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়নে প্রথম নারী চেয়ারম্যান হিসাবে জনপ্রতিনিধিত্ব করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
জনগণের আগ্রহ, উৎসাহ, সমর্থন আর ভালোবাসায় আমি আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবো ইনশে আল্লাহ।
স্বামী হারা ফারহানা আফরিন মুন্না বলেন, আমার স্বামী নাছির উদ্দিন নোবেলকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা, খুনিরা মনে করেছিল সাধারণ মানুষ, অপামর জনগণের হৃদয় থেকে নোবেলের নাম মুছে দিতে পারবে। কিন্তু শহীদ নোবেলকে জনগণ ভুলেনি, ভুলবে না, তাকে ভুলে যাওয়ার মতো মানুষও ছিলেন না। তিনি সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন।তিনি সাধারণ মানুষের মনিকোঠায় স্থান করে গেছেন।

তিনি বলেন, আমার স্বামী নিহত নাছির উদ্দিন নোবেল জনগণের সেবক হতে চেয়েছিলেন। সে লক্ষ্য এলাকায় প্রচার প্রচারণা চালিয়ে জনগণের আস্থা, আর ভালোবাসা অর্জন করে ছিলেন। নাছির উদ্দিন নোবেল ছিলেন চট্টগ্রাম ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, রাজপথ কাপানো সাবেক ছাত্র লীগ নেতা, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা ও পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, সমাজ সেবী সংপঠন আলো’ সভাপতি, মুজিব আর্দশের লড়াকু সৈনিক। নোবেল বহু শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জড়িত ছিলেন। নিরবে সরবে মানুষের উপকার করে গেছেন। কারও ক্ষতি তিনি কোনদিন করেনি। একজন আর্দশিক মানুষ ছিলেন আমার নিহত স্বামী নাছির উদ্দিন নোবেল।
জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়ায়, এলাকায় দিনদিন জনপ্রিয়তা অর্জন করাই ছিল আমার স্বামীর জন্য কাল।
চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায়

তার জনপ্রিয়তা এক মুহুর্তের সহ্য করতে পারেনি সন্ত্রাসী বাহিনী, খুনি চক্র। অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে তাকে গত ১৭ আগস্ট দিনদুপুরে প্রকাশ্যে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়। এতে পূর্ব বড় ভেওলাবাসীর স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে যান নিহত নাছির উদ্দিন নোবেলের ভালোবাসার সাধারণ মানুষগুলো।

তিনি অশ্রু ঝরিয়ে আরও বলেন, আমাকে বিধবা বানিয়েছেন খুনিরা, আমার দুই শিশু সন্তানকে এতিম করেছে। স্বজন আর এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে একজন আর্দশিক নেতা, ভালো মানুষ ও অভিভাবক হারা করেছে খুনিরা।

নিহত নোবেলের প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ ভালোবাসা রয়ে যাবে যুগে যুগে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়নবাসীকে নিয়ে আমার স্বামী নোবেল যে স্বপ্ন দেখতেন, আমি সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি।

নিহত নাছির উদ্দিন নোবেলের স্ত্রী ফারহানা আফরিন মুন্না আরও বলেন, পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন বাসীকে নিয়ে আমার স্বামী নাছির উদ্দিন নোবেলের যে স্বপ্ন ছিল, সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আমি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছি, আমাকে সবাই দোয়া ও সমর্থন দিয়েছে । এলাকার মুরব্বিদের সাথে আলোচনাসহ সব শ্রণী পেশার মানুষদের আগ্রহ, দোয়া ও সমর্থন রয়েছে।
তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, আমার স্বামীর স্বপ্ন পূরণে, এলাকার সার্বিক উন্নয়নসহ আমি জনগণের পক্ষে কাজ করতে চাই।

যারা আমাকে সব সময় সাহস, উৎসাহ, অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন আমি তাদের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যায় ও দুর্নীতিমুক্ত এলাকা গড়তে আমি কাজ করব। মাদকসেবী, সন্ত্রাসী ও সহিংসতাকারিদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। আমি সবার দোয়া ও সমর্থন চাই। তিনি সকলের সহযোগিতা ও দু’আ কামনা করেন।

পাঠকের মতামত: